`

দেখে এলাম ক্যামব্রিজ সেন্ট্রাল জামে মসজিদ

  • Views: 370
  • Share:
নভেম্বার ২৯, ২০২১ ২২:৩১ Asia/Dhaka

অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী :: বৃটেনে আসার পর এখন পর্যন্ত যতগুলো দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখেছি, তার মধ্যে ক্যামব্রিজ শহর অন্যতম। মূলতঃ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়  ঘুরে দেখার জন্য ক্যামব্রিজ শহরে গিয়েছিলাম। ক্যামব্রিজ সেন্ট্রাল জামে মসজিদের কথা আমার জানা ছিল না। 

বন্ধুবর আবিদ, আফসানা ভাবি ও তাদের একমাত্র ছেলেসহ আমরা চারজন ক্যামব্রিজ দেখতে যাই। ভাবির মুখে প্রথম ক্যামব্রিজের দৃষ্টিনন্দন মসজিদের কথা শুনতে পাই। সিদ্ধান্ত হয়, ক্যামব্রিজ শহরে ঢুকেই প্রথমে মসজিদ দেখতে যাব। সেখানে যোহরের নামাজ আদায় করে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব। যেই কথা, সেই কাজ। যোহরের নামাজের আজান হতে না হতে আমাদের গাড়ি মসজিদের নিকটে পৌঁছে যায়। গাড়ি থেকে নেমে পড়ি। সত্যি, অসাধারণ এক মসজিদ ! অপূর্ব কারুকার্য খচিত মসজিদ। যোহরের নামাজ এই মসজিদেই আদায় করি। মসজিদের ভেতর ও এর চারদিক ঘুরেফিরে দেখি।

এই মসজিদটি ইংল্যান্ড তথা সমগ্র ইউরোপের মধ্যে একটি অন্যতম দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। এটি বৃটেনের ক্যামব্রিজ শহরে বিশ্ববিখ্যাত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদম কাছাকাছি জায়গায় অবস্থিত। মসজিদটি ২০১৯ সালে তৈরি হলেও ২০০৮ সালে এটি নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ নেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর টিমোথি উইন্টার। এই অধ্যাপক ক্যামব্রিজের মুসলমানদের কাছে আব্দাল হাকিম মুরাদ নামে পরিচিত। ২০০৯ সালে মসজিদের জন্য এক একর জমি ক্রয় করা হয়। এতে চার মিলিয়ন পাউন্ড খরচ পড়েছিল। এর নকশা এঁকেছিলেন লন্ডনের বিখ্যাত স্থাপত্যশিল্পী মার্ক বারফিল্ড যিনি 'লন্ডন আই'সহ অনেক বিখ্যাত স্থাপনার  ডিজাইনার ছিলেন। এতে আরো সম্পৃক্ত ছিলেন স্থাপত্যশিল্পী এবং ইসলামিক জ্যামিতিক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর কিথ ক্রিচলো এবং প্রখ্যাত গার্ডেন ডিজাইনার এমা ক্লার্ক। 

দীর্ঘ প্রায় আট বছরের গবেষণা এবং তহবিল সংগ্রহ শেষে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মসজিদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হলেও দুই-তৃতীয়াংশ অর্থ তুরস্ক থেকে এসেছে বলে জানা যায়। তাই ২০১৯ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী এই মসজিদ উদ্বোধন করেন। এই মসজিদের স্থাপত্যের একটি বিশেষ দিক এই যে, এর ডিজাইনটি টেকসই (sustainable-design) এবং শূন্য কার্বণ নিঃসরণ যোগ্য। দিনের বেলায় প্রাকৃতিকভাবে যে আলো আসে, তা-ই মসজিদের জন্য যথেষ্ট। প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় সোলার প্যানেলের সাহায্যে। 

মসজিদটির অন্যতম আকর্ষণ এই যে, এর ভেতরে ইটের পিলারের পরিবর্তে গাছের কলাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা একান্ত পরিবেশবান্ধব। এটি মসজিদের ভেতরে অন্য এক সৌন্দর্য্য তৈরী করে রেখেছে। পুরো মসজিদের নকশা জ্যামিতিক কারুকাজ এবং ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি শোভিত। মসজিদের সামনের বাগানটি সত্যিকার অর্থে এক শান্ত মরুদ্যান। বিশাল অজুর জায়গাসহ মেয়েদের জন্য আলাদা নামাজের হলঘর আছে। পুরুষদের জন্য পৃথক মসজিদের মুল হলঘরে সারি সারি গাছের কলাম বসানো। ছাদে অপূর্ব জ্যামিতিক ডিজাইন।

user
user
Ad
Ad