`

 জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ও মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনার প্রেক্ষিতে

  • Views: 285
  • Share:
অক্টোবার ২৫, ২০২১ ২০:০৪ Asia/Dhaka

মোঃ জহির উদ্দিন :: প্রতিবারের মতো  ২২ শে অক্টোবর দেশে  জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসটি পালিত হচ্ছে । সড়কে যানবাহন কেন্দ্রিক দূর্ঘটনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করলে যে মর্মান্তিক অবস্থা প্রতিদিন পরিলক্ষিত হয়, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, করুণ,  বেদনাদায়ক এবং অমানবিক।  শুধু সড়ক পথই নয়, নৌ পথেরও অসংখ্য হৃদয় বিদারক মর্মান্তিক ঘটনাও আমাদেরকে প্রতি বছর দেখতে হয়, সইতে হয়।

আর করুণ ঐ সব দৃশ্য যেমন দেখতে হয় তেমনি প্রিয়জন হারানোর  হাহাকারকৃত ঐসব বুকভাঙা আকুতি আমাদের হৃদয়েও ধারণ করতে হয় । গড়ে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ২০/২৫ জন মানুষ মারা যান, আর অসংখ্য জন আহত হন । তার পেছনের  অসংখ্য কারণের মধ্যে প্রধানতম কারণগুলো যেমন, প্রশিক্ষিত ও পেশাদারীত্বের অভাব, অনবিজ্ঞ ও অপ্রাপ্ত বয়সীরা ড্রাবিংগে থাকা, সড়কের কাঠামোগত ত্রুটি ও প্রয়োজনীয় ডিভাইডার না থাকা,স্বাস্থ্যগত আনফিটনেস, জনসংখ্যার তুলনায় রাস্হাঘাটের অপর্যাপ্ততা,  ফিটনেস বিহীন ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চালানো , স্পীড লিমিট না থাকা, আইনের আধুনিকায়ন ও প্রয়োগের অভাব, পর্যাপ্ত দায়বদ্ধতা ও ক্ষতিপরণ প্রদানের ব্যবস্হা না থাকা এবং উপজেলা লেবেলে মানুষের নাগালের মধ্যে যথাযথ ড্রাইভিং শিক্ষণের ব্যবস্হা না থাকা ইত্যাদি৷। 

তাছাড়া কাউকে কেবল গাড়ির মালিক হলেই হয় না, মালিককেই গুরু দায়িত্বও পালন করতে হবে এবং খুব ভেবে চিন্তে গাড়িটি একজন যথাযোগ্য ড্রাইভারের হাতে তুলে দিতে হবে, কেননা এটি শুধু টাকাই ইনকাম করে না, বেহাতে চালালে জীবন ও সম্পদ ধ্বংস করে। কাজেই চালকের হাতে গাড়ি তুলে দিয়েই দায়িত্ব শেষ হয় না, চালক গাড়িটি কেমন করে চালায় গোপনে নিয়মিত তার খুঁজ খবর নিতে হবে এবং প্রয়োজনে অপরিচিত কাউকে প্যাসেঞ্জার বানিয়ে মাঝেমধ্যে তাকে গাড়িটি চড়াতে হবে, যাতে সে এসে আপনাকে সঠিক তথ্য দিতে পারে, ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় গাড়ির মালিকগণ চালক সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা উচিত। 

তাছাড়া একজন ড্রাইভারকে শুধু দক্ষ হলেই হবে না, যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য তাকে সচেতনও থাকতে হবে, যেমন ,অন্য আরেকজন অদক্ষ চালক দ্বারা দূর্ঘটনার কবলে পড়তে যেনো না হয় ইত্যাদি এবং প্রশিক্ষণ মাঝে মধ্যে প্রয়োজন, আর প্রশিক্ষণ বলতে কেবল গাড়ি চালনার বিষয়টি বুঝায়না, সচেতনতা সম্পর্কিত জ্ঞানভিত্তিক আলাপ আলোচনাকেও বুঝায়।  বয়স, অভিজ্ঞতা, জীবনবোধ, নানা ফিটনেস, সতর্কতা, ইত্যাদি সবকিছু মিলিয়েই প্রকৃতপক্ষে একজন যথাযথ ড্রাইভার হন ।  আর সড়ক দূর্ঘটনায় আমরা যে শুধু প্রিয়জনই হারাচ্ছি, তা নয়, অনেক পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকেও হারিয়ে পরিবারটিকে পথে নামিয়ে ভিখেরীতে পরিণত করছি, কেননা আমাদের দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্হাপনায় সরকার বা গাড়ির মালিক কাউকেই দূর্ঘটনা জনিত ক্ষতিপূরণের তেমন দায়-দায়িত্ব নিতে হয় না কি়ংবা কঠিন কোনো শাস্তি ভোগও করতে হয় না।  

অন্যদিকে যারা আহত হন তাদেরকে বাঁচাতে গিয়ে পরিবারগুলো নিঃশ্ব হয়ে চরম দরিদ্রতায় নিষ্পিষ্ট হতে হয়। শুধু কি তাই, কোনো ব্যক্তি হয়তোবা সারাজীবনের জমানো সম্পদে একটি গাড়ি কিনেছিলেন কিন্তু দূর্ঘটনায় তিনিও পথের ভিখেরী হয়ে যান । এভাবে সড়ক  দূর্ঘটনা জনিত কারণে প্রতিদিন কেউ না কেউ দরিদ্র সীমার নীচে পতিত হচ্ছেন । কাজেই  সড়ক দূর্ঘটনা যে শুধু মৃত্যুর কারণ, এমনটি  নয়, এটি দরিদ্র করণের অন্যতম একটি জঘন্য  বিষয়ও বটে এবং তা বুঝতে আমাদের অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। কাজেই এই প্রেক্ষাপটে দিবসটিকে শুধু আনুষ্ঠানিকতার দিবস হিসেবেই পালন না করে প্রকৃত অর্থে  অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে রাষ্ট্রের সরকার ও সংশ্লিষ্ট  সমাজকে এর মর্মার্থ  গ্রহণ করা উচিত, যাতে এর প্রতিক্রিয়া পরিবহন সংশ্লিষ্ট সর্বসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে । 

সড়ক দূর্ঘটনা প্রিয়জনকে হারানো বা দারিদ্রতারই শুধু ঘটনা নয়, এটা একটা জাতির সভ্যতাকে যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করে, তেমনই তার রাষ্ট্র ব্যবস্হাপনাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে, গোটা জাতিকে হেও প্রতিপন্ন করে । কেননা, কোনো সভ্য সমাজে এমনটি ঘটতে দেয়া হয় না । এছাড়া কোনো মহামারিতে যে পরিমাণ মাুনষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, তার চেয়েও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের দেশে প্রতিদিনের সড়ক দূর্ঘটনায় । কেননা দূর্ঘটনায় একটি মাত্রই ঘটনা ঘটে না,  আমরা কেউ প্রিয়জনকে হারাই, আহতদের বাঁচাতে সর্বসান্ত হই, সারাজীবনের কষ্টের কারণ ও মানসিক সংকট সৃষ্টি হয় যা অপূরণীয় ।  আবারও কেউ কেউ সারাজীবনের জন্য পুঙ্গুত্ব বরন করেন। 

আর এই দূর্ঘটনার গ্লানির সিরিয়ালে বিশ্বে আমরা হয়তো দ্বিতীয় বা তৃতীয় অবস্হনে ।  উন্নত ও সভ্য দেশে সারা বছরেও সড়ক দূর্ঘটনায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মারা যায় না,অথচ তা আমাদের জন্য সাধারণ হয়ে গেছে । কাজেই  এটা আজ আমাদের জন্য শুধু বিপদজনকই নয়,  অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুঃখজনকও বটে  । কেননা, দেশ যেখানে  হাজারো বিষয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে কেন এই একটি বিষয়ে আমরা পেরে  উঠতে পারছি  না, তার দ্রুত চিন্তা ভাবনা করা প্রয়োজন । সরকার যখনি সড়কের নিরাপত্তার জন্য জনমত অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করতে চায়, তখনই নানা বাঁধাবিপত্তির সৃষ্টি হয় । বারবার আমরা চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে  সেই আগের জায়গায় এসেই থামি ।  

অথচ আমরা সাধারণ মানুষ শুধু নয়, এ পেশায় যারা জড়িত তাদেরকেও আমরা বুঝিয়ে উঠতে পারেনি যে , যে পেশার আইন যত শক্তিশালী ও কঠিন, সে পেশার শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও মর্যাদা ততো বেশি । এখানে শুধু যাত্রীই যে মারা যান তাই নয়, এখানে অনেক গাড়ির চালক, হেলপারও মারা যাচ্ছেন এবং অনেক মালিকের গাড়িও ধ্বংস হচ্ছে ।  আর মামলা মকদ্দমায় বাকীটুকু সর্বসান্ত হচ্ছেন ।  

অথচ সময়ের গতিতে যানবাহনের সংখ্যা ও গতি যেমন বেড়েছে,  তার সড়ক ব্যবস্হাপনা, আইন এবং নীতিমালাও তেমনই  গতিশীল হওয়া দরকার ছিলো । যে পেশার আইন যত সমৃদ্ধ হয় সেই পেশাদারীত্বের মানুষগুলো প্রতিদিন ততই সতর্ক ও সচেতন থেকে থেকে অনেক বেশি অভিজ্ঞ ও ঝুঁকিমুক্ত হয়ে উঠেন এবং একটি আস্হাশীল পেশাদার ও  মর্যাদাবান শ্রেণীতে পরিণত হন ।  কাজেই যানবাহন ,যাত্রী, তার চালক ও পরিবার, পরিজন সকলের নিরাপত্তা ও মর্যাদা উন্নয়নে সবার আগে একটি সময়োপযোগী আইন প্রণয়নের সমন্বিত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন একান্ত প্রয়োজন । একটি সড়ক দুর্ঘটনা যে সারা জীবনের কান্নায় পরিণত হয়, তার একটি জ্ঞানভিত্তিক জীবনমুখী অধ্যায়ে স্কুল কলেজের পাঠ্যসূচীতেও রাখা প্রয়োজন, যেহেতু এটি একটি সার্বজনীন বিষয় । আর এ ক্ষেত্রে পরিবহন পেশার  সাথে জড়িত সকলের মধ্যে ক্রমান্বয়ে একটি গণসচেতনতা ও মূল্যবোধ সবার আগে সৃষ্টি করা একান্তই দরকার । 

তাছাড়া আমাদের সমাজ ব্যবস্হাও,  অবস্হার জন্য অনেকটা দায়ী । কেননা জীবনমুখী  পেশাগুলোকে অবহেলার চোখে দেখতে দেখতে আজ আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম ও  পেশা, যেমন নানাবিধ খাদ্য উৎপাদন ও বিপণন কাজকর্ম এবং যানবাহন পরিচালনাসহ নানা  পেশা থেকে অর্ধশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা  ও পারিবারিক আভিজাত্যের মানসিকতা বশতঃ এটা ওটা অনেক কিছু থেকেই আজ আমরা নিজেদেরকে সরিয়ে বিচ্যুত ও সীমাবদ্ধ রাখতে গিয়ে জীবনমুখী বিষয়গুলোর জন্য একান্তভাবে অক্ষম ও পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েছি এবং পেশাগুলোতে সার্বজনিন সম্পর্ক গড়ে না উঠাতে, এগুলো একপেশে হয়ে আছে। 

এই আমরাই যখন প্রবাসী হই, তখন আবার সেখানে যেকোনো পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারি । কারণ সেখানে কেবল পেশা দ্বারাই তার মানবিক মূল্যায়ন ও বংশানুক্রমিক  ধারা সৃষ্টি করা হয় না বলেই উন্নত সমাজ কাঠামোগত কারণেই আমরা সেখানে নিজেকে যেকোনো পেশায় নিয়োজিত করতে পারি এবং  এভাবে দারিদ্রতা থেকে মুক্তির সাথে সাথে আমাদের ব্যক্তিত্বেরও উন্নতি হয় এবং আমরা তখন শিক্ষা -দিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে সামাজিক ও মানবিক উন্নয়ন ঘটাতে পারি ,  যা ব্যক্তিত্ব অর্জনে সহায়ক এবং এভাবে আমরা ব্যক্তিত্ব অর্জনের দিকে ক্রমান্বয়ে এগুতে থাকি। আর ব্যক্তিত্ব বলতে বুঝায় আত্নসম্মান বা আত্বর্যাদা বোধ থাকা । আর যার আত্নমর্যাদা বোধ থাকে,  সে সাধারণত কোনো খারাপ কাজ করতে পারে না এবং একারণেই তাকে সকল কাজে সতর্কতা অবলম্বন করে দায়িত্বশীল হতে হয় । 

কাজেই ব্যক্তিত্ববানেরা সকল পেশায় নিয়োজিত না হওয়া পর্যন্ত সামগ্রিক উন্নয়নের আশা করা যায় না । আমরা যারা প্রবাসের অনেক অনেক আইন শৃঙ্খলা ও নিয়মনীতির কথা দেশে এসে  বলে তাদের  প্রশংসায় পঞ্চমুখ হই,  ঐ তাদেরও অনেকেই  কিন্তু দেশে যখন অবস্থান করেন তখন তা প্রায়ই নিজের দেশে তা  মানতে চান না । কাজেই মূল কথা হচ্ছে স্নেহ মমতা, দেশাত্ববোধ আর ভালোবাসা ছাড়া ব্যক্তিত্ব পরিপুষ্ট হয় না । তার কারণ, ঐ গুণাবলীগুলোর বন্ধন থাকলেই  প্রত্যেকটি কাজের পেছনে আত্নমর্যাদাবোধ কাজ করে এবং সেজন্য তারা এমন কোনো কিছু করেন না, যা তার পরিবার ও নিজের  মর্যাদা নষ্ট করে কিংবা সমাজের কোনো শোচনীয় দৃষ্টিতে পড়তে হয় । 

 কাজেই অন্য পেশার কথা না বলে আজকের এই দিবসে , একজন গাড়ি চালকের কথাই যদি বলি, তাও উদাহরণ হিসেবে যথেষ্ট হবে । অর্থাৎ তার পরিবার তথা স্রী, ছেলে মেয়ে পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বোধ থাকলেই তাকে প্রতিদিনের কাজকর্মে সতর্কও সচেতন থাকতে হবে, অনন্ত এইটুকু ভেবে যে,  আমার প্রিয়জনেরা আমার বাড়ী ফেরার জন্য অপেক্ষায় আছেন এবং আমার একটা কিছু হলে সারাজীবনের জন্য  তারা চরম কষ্টের শিকার হবেন । এ বোধটুকু জাগ্রত থাকলেই যথেষ্ট হবে, কেননা তখন তিনি একই সাথে প্যাসেঞ্জারের কথাও ভাববেন । কাজেই পারস্পরিক এই দায়বদ্ধতাটুকু থাকলে কেউ  কখনো বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাতে পারবেন না । 

কারণ আত্নমর্যাদাবোধের বন্ধনের,এই ভালবাসাটুকু কখনো কাউকে দিয়ে কোনো অমঙ্গলজনক কিছু ঘটাতে দেয় না। কাজেই যেকোনো ক্ষেত্রে, যেকোনো পেশায় সার্বিক নিরাপত্তার জন্য  ব্যক্তিত্ববানদের অংশ গ্রহণ থাকা প্রয়োজন । আর  তা সৃষ্টির মূল চাবিকাঠি হচ্ছে সেই শিক্ষা যা  আমাদেরকে সহনশীল ও আত্মমর্যাদাবোধের মতো  ব্যক্তিত্বে পরিণত করতে পারে এবং তখনই আমরা যেকোনো পেশায় আত্নমর্যাদাবোধ থেকে  সহনশীল ও সচেতন হয়ে নিরাপদ ও দূর্নীতিমুক্ত থাকতে পারবো । 

আত্মমর্যাদা বোধ না থাকলেই একজন ব্যক্তিত্বহীন ব্যক্তি যেকোনো ঘোষ, দূর্নীতি, লুটপাট সবই করতে পারেন এবং তার এ দূর্নীতি  ছেলে মেয়ে পরিবার ও  অন্য যে কেউ  জানলেও তার কিছুই যায় আসে না, কারণ মাত্র একটি যে, তার আত্নমর্যাদা বোধ নেই । কাজেই আত্নমর্যাদা ও  সহনশীলতা বোধ জাগ্রত না হলে কোনো পেশা বা শ্রেণির জন্য কেবল আইন গঠন করে, শাস্তি প্রয়োগ করে তা বাস্তবায়ন করা প্রকৃতপক্ষে সম্ভব নয় । কাজেই একটি সহনশীল ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পণ্ন জাতি গঠনের জন্য সর্বাগ্রে একটি সুপরিকল্পিত ও জীবনমুখী শিক্ষা ব্যবস্হা গ্রহণ করা একান্তভাবে  আবশ্যক। 

লেখক  
অধ্যক্ষ মোঃ জহির উদ্দিন 
শাহ নিমাত্রা এস.এফ ডিগ্রি কলেজ।
জুড়ি, মৌলভীবাজার।

user
user
Ad
Ad