`

ঠগীর সর্বনাশ!

  • Views: 1474
  • Share:
এপ্রিল ২১, ২০২৪ ১৯:২৬ Asia/Dhaka

আহনাফ যাহিন:: মিস্টার  জেফারসন  ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে চাকরি করেন। খবর পাওয়া যাচ্ছে, ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মাটির নীচে গনকবর পাওয়া যাচ্ছে। কাদের কবর বা কারা পুতেছে তা জানা যায়নি। গভর্নর উইলিয়ামস স্লিম্যানের কানে এ খবর এসেছে। তিনি জানতে পারলেন ঠগী  নামের এক খুনী  সম্প্রদায় এ কাজ করছে। এ সম্প্রদায় বংশপরম্পরায় এ কাজ করে আসছে। এক টুকরো কাপড় তেমন কোন  ক্ষতিকর মনে না হলেও একটুকরো কাপড় ই তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।

উইলিয়াম স্লিম্যান এই ঠগীদের দমন করতে চান। তিনি বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদেরকে এ কাজে নিয়োগ করেছেন। তারা পরবর্তী ঠগী  আক্রমণের সম্ভাব্য তারিখ সময় ও অবস্থান নির্ণয় করেছেন। মিস্টার  জেফারসন  কে এ কাজে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ছদ্মবেশে অস্ত্র নিয়ে যাবেন।ঠগীদের ধরাই তার মূল উদ্দেশ্য। এ পথ দিয়ে ঠগী না ও যেতে পারে। তার সাথে একজন ভারতীয় আছে। তারা ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে যাবেন। ঘোড়ার গাড়িটা সকাল নয়টায় ছাড়ার কথা। গাড়ি সময় মত ছাড়লো। তার সাথে অস্ত্র  এবং  কিছু খাবার নিলো। 

মিস্টার  জেফারসন  তার ভারতীয় সহযাত্রীর কাছে থেকে জানতে পারলো ঠগীরা ভারতীয় পথযাত্রীদের জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্ক।  অরিজিৎ চক্রবর্তীর এক দূরসম্পর্কের আত্মীয় বোম্বেতে যাওয়ার কথা বলে আর  ফেরেনি।  তারা ধরে নিয়েছে যাত্রা পথে ঠগীর আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। অরিজিৎ চক্রবর্তীর কাছে ঠগীদের সম্পর্কে উইলিয়াম নানাকিছু জানলো। জানতে চাইলেন ঠগীদের কাছে অস্ত্র থাকে কিনা? অরিজিৎ চক্রবর্তী  বলেন ঠগীরা এক টুকরা কাপড় যার মাথা তামার পয়সা দিয়ে গিট দেওয়া। এই এক টুকরো  কাপড় দিয়ে  কোন রক্তপাত ছাড়া পথযাত্রীদের মেরে ফেলে। এভাবে গল্প করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। এবার  খাওয়ার পালা। অরিজিৎ চক্রবর্তী  নিজে এবং  উইলিয়ামের  জন্য খাবার প্রস্তুত করছেন। 

এদিকে ঠগী সম্প্রদায়ের একজন সদস্য তাদের পরবর্তী শিকার মিস্টার  জেফারসন  এবং অরিজিৎ চক্রবর্তী সম্পর্কে খবর জোগাড় করছে।ঠগী সম্প্রদায়ের মধ্যে কাজ ভাগ করা থাকে। সদস্যটি যখন জানতে পারলো গাড়িতে একজন ইংরেজি সাহেব যাচ্ছেন, তখন তার লোভ দ্বিগুণ হয়ে গেল। দ্রুত সর্দারকে খবর জানাতে হবে। ঠগীদের সর্দারের বরাবরই লোভ একটু বেশি থাকে। এ খবর শুনে তার লোভ বেড়ে গেল। আজ দারুন  লুটপাট করা যাবে। গঙ্গারামকে খবর দেওয়া হল। গঙ্গারাম ভালোভাবে মানুষজনের সাথে মিশে যেতে পারে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব সবসময় গঙ্গারামের কাঁধে পড়ে। সর্দার গঙ্গারাম কে সব বুঝিয়ে দিচ্ছেন। গঙ্গারাম অপেক্ষা করছে গাড়ির জন্য। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সে দেখল একটি ঘোড়ার গাড়ি আসছে। সে গাড়িটি থামালো।

 গঙ্গারাম কে দেখে দুজনেই বুঝে ফেলল তারা ঠগীর পাল্লায় পড়েছে।গঙ্গারাম সহজেই অরিজিৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে মিশে গেল। গঙ্গারাম মাঝপথে বলল, এদিক দিয়ে আমার বাড়ি, একটু চা খেয়ে আসুন। অরিজিৎ চক্রবর্তী  ও  জেফারসন  না করলেন। শেষ পর্যন্ত তারা প্রায় বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নামলো। তারা জানতো না এরপর কি হতে  চলেছে! গাড়ির সাথে সাথে একটি ঠগীর দল অনুসরণ করছিল। এটি তারা জানতো না। হঠাৎ তারা দেখেন সর্দার  হুকুম দিচ্ছেন হাত বাঁধতে। মিস্টার জেফারসন  দেখলেন চোখের পলকে এক লোক তার হাত চেপে ধরেছে। জেফারসন  বিস্ময়বোধ কাটিয়ে লোকটির কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেন। দ্রুত পিস্তল বের করেন এবং ঠগীদেরকে আটক করেন। তাদের অভিযান সফল হলো। অবশেষে সব ঠগীদের মৃত্যুদন্ড দন্ডিত করা হলো।  

আহনাফ যাহিন
৬ষ্ঠ শ্রেণী, ব্লুবার্ড স্কুল এন্ড কলেজ।

user
user
Ad
Ad